« নীড়পাতা | হাইকিং - চমকে ভরা পিকাচু পিক (৩) » | হাইকিং - চমকে ভরা পিকাচু পিক (২) » | হাইকিং - চমকে ভরা পিকাচু পিক (১) » | ব্রংক্স চিড়িয়াখানা - নিউইর্য়ক » | মেট্রোপলিটন মিউজিয়াম অফ আর্ট - নিউইর্য়ক » | মাদাম তুসোর জাদুঘর - নিউইয়র্ক » | স্যান দিয়েগোর রিক্সা » | স্যান দিয়েগো সমুদ্র দর্শন » | সিক্স ফ্ল্যাগস: লস অ্যানজেলস » | স্প্রীং ব্রেক »

লাস ভেগাস ও ইয়োসেমিটি ন্যাশনাল পার্ক - ১



১। ইন্টারনেট থেকে পাওয়া লাস ভেগাসের ছবি

মাস্টাসের্র প্রথম সেমিস্টারটা যখন শেষ করলাম তখন ভীষন স্ট্রেসড আর টায়ার্ড। তাই সহপাঠি শিখ বন্ধু গাগান যখন প্রস্তাব করল লাস ভেগাস আর ইয়োসেমিটি ভ্রমনের তখন লুফে নিলাম প্রস্তাবটা।

লাস ভেগাস নিয়ে কি রকম ধারনা ছিল আমার সেটা আগে বলে নিই। বিভিন্ন লেখায় পড়ে, ছবিতে দেখে আমার ধারনা ছিল লাস ভেগাস - সিন সিটি, চরম পাপের জায়গা। ওখানে যারা যায় মদ খাওয়া, মেয়ে মানুষ এই নিয়ে কারবার তাদের। ভীষন বিচ্ছিরি নিশ্চয়ই ব্যাপারটা। তবু মনে মধ্যে যে বাঙালীর চোরা সহজাত আগ্রহটা ছিলনা তা নয়।

এই সুত্রে একটা ঘটনা বলে নেই। এইখানকার এক সিনিয়র আছেন। তার সাথে বেশ ঘোরা ফেরা করতাম। ভিসা হয়ে গেলেও তখনও আমার স্ত্রী আসেনি এখানে। এক উইকএন্ডে ইন্টেলের মাঠে ক্রিকেট খেলতে গেলাম ভাইয়াটার সাথে। পরে রাত ২ টা পর্যন্ত আরেকজনের বাসায় ব্যাডমিন্টন খেলে ফেরার পথে আমাকে ভাইয়াটা বলছেন চল যাবা নাকি লাস ভেগাস? আমার তৎক্ষনাত প্রতিক্রিয়া ছিল, 'কি বলেন ভাইয়া, আমি তো ম্যারেড। আমি লাস ভেগাস গিয়ে কি করব?' শুনে সেই ভাইয়া তো হাসবে না কাঁদবে বুঝছেন না। বললেন 'ম্যান, লাস ভেগাসে কি মানুষ খালি ঐসব করতে যায়?' (যাহ)

মূল ঘটনায় ফিরে আসা যাক। আমাদের প্ল্যানটা ছিল একরকম, প্রথমে ড্রাইভ করে সোজা লাস ভেগাস। সেখানে রাতটা কাটিয়ে পরের দিন সকালে রওনা দেব ইয়োসেমিটি ন্যাশনাল পাকের্র উদ্দেশ্যে। সেদিন রাতে পাকের্ রাত কাটিয়ে দ্বিতীয় দিন সকালে হাইকিং। দ্বিতীয়দিন রাতে ওখানে একটা স্পটে ক্যাম্পিং করে তৃতীয়দিন সকালে বাড়ি ফেরত। বিরাট প্ল্যান। ঠিক করলাম ঢাকায় জানানো যাবেনা, যেতে দেবেনা তাহলে। সুতরাং চুপচাপ করে নিতে লাগলাম প্রস্তুতি। আমি তো মহা উৎসাহে এ উপলক্ষ্যে একটা ক্যামেরা কিনে ফেললাম। কিন্তু ক্যামেরা আর হাতে আসে না।

যেদিন যাব সেদিন বিকেলে আমার প্রফেসর বঁাধাল এক ফ্যাকড়া। কোন এক মিটিং এ যাবে, আমাকে আর ল্যাবের আরেকজনকে বলল তোমরা থাক আমি তোমাদের সাথে কথা বলব রিসাচের্র ব্যাপারে। এদিকে আমাদের রওনা দেবার কথা বিকাল ৪ টায়। সময় গড়িয়ে ৫ টা - ৬ টা হয়ে যাচ্ছে প্রফেসরের কোন খবর নেই। এইদিকে বন্ধুরা তাগাদা দিচ্ছে। এর মাঝে খবর পেলাম আমার ক্যামেরা চলে এসেছে। শেষে বিরক্ত হয়ে ৭ টার সময় প্রফেসরকে না বলে রওনা দিলাম।

তাড়াহুড়া করে রওনা দিলে যা হয়, আমার দায়িত¡ ছিল রোড ডিরেকশন গুলো নেয়া। আমি সেগুলো বাড়িতে ফেলে চলে এসেছি। ভাগ্যিস কিছুদুর যাবার পর সেটা মনে পড়ল, আবার ফিরে এসে সেগুলো নিলাম। এত বিরাট জানির্ ম্যাপ, রোড ডিরেকশন এগুলো না নিলে পথে বেরুনোই অসম্ভব।

এই ফাঁকে একটা তথ্য দিয়ে রাখি। আমাদের প্ল্যানটা ছিল সামারের লং উইকএন্ডে। এই সময়টা আসলে অনেকেই লং ট্রিপ প্ল্যান করে। আর খুব একসিডেন্টও হয়। আমাদের সাথেই সেদিন রওনা দিল আরেকটা বড় গ্রুপ, ইন্ডিয়ানদের। ওরা দুই মাইক্রোবাসে করে যাচ্ছিল। আমাদের সাথেই মাইক্রো ভাড়া করল তারা। ওরাও যাবে লাস ভেগাস হয়ে অন্য কোথাও।

যাই হোক, যাবার পথে আবার এক ফ্যঁাকড়া। মাঝখানে রাস্তা বন্ধ। সুতরাং রোড ডিরেকশন ভেঙ্গে বেরিয়ে আবার কোনভাবে মূল রাস্তার সাথে মার্জ করতে হবে। সে মূল রাস্তা আর খুঁজেই পাইনা আমরা। প্রায় ঘন্টাখানেক চকির্র মত পাক খেয়ে খেয়ে অবশেষে উঠলাম মুল রাস্তায়।

অ্যারিজোনা থেকে লাস ভেগাস, মানে নেভাডা স্টেটে যাবার পথে পড়ে হোভার ড্যাম নামে একটা ড্যাম। একটা ড্যাম দেখতে এত সুন্দর হতে পারে আগে না দেখলে বিশ্বাস করতাম না। আমার ক্যামেরায় তোলা ছবি গুলো নেই। কি ভাবে হারালো সেটা পরে বলব। একটাই ছবি আছে জায়গাটার, আরেকজনের ক্যামেরায় তোলা তাও ভাল দেখা যাচ্ছেনা জায়গাটা (ছবি - ২)।


২। হোভার ড্যামের সামনে আমরা

ওখানটায় আধা ঘন্টার মত কাটিয়ে আবার রওনা দিলাম লাস ভেগাসে দিকে। তখন বাজে প্রায় রাত ১২টা। পাপের শহর লাস ভেগাস কি খোলা থাকবে যখন আমরা পৌছাব? নাকি সবাই থাকবে ঘুমে বিভোর? এত কষ্ট করে যাওয়াটা কি বিফলেই যাবে?


৩। হোভার ড্যামের এরিয়াল ভিউ

আমার সর্ম্পকে

  • আমি
  • বর্তমানে আছি
আমার প্রোফাইল